ভারতীয় ধনকুবেরের কন্যা উগান্ডায় বন্দি!

ছবি সংগৃহীত

 

উগান্ডার পুলিশ বসুন্ধরা অসওয়াল নামে ভারতীয় এক ধনকুবেরের কন্যাকে আটক করেছে। অসওয়াল পরিবারের কর্মচারী মুকেশ মেনারিয়াকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় বসুন্ধরাকে আটক করে।

 

ব্যক্তিগত বিমানসহ সারা বিশ্বে অসওয়াল পরিবারের যত বাড়ি রয়েছে, সেগুলো দায়িত্ব ছিল মুকেশের ওপর। খবর আনন্তবাজার পত্রিকার।

তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় বন্দি সুইজারল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনকুবের পঙ্কজ অসওয়ালের কন্যা বসুন্ধরা অসওয়াল।

 

অসওয়াল পরিবারের কর্মচারী মুকেশ মেনারিয়াকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় তাকে আটক করে উগান্ডার পুলিশ। ব্যক্তিগত বিমানসহ সারা বিশ্বে অসওয়াল পরিবারের যত বাড়ি রয়েছে, সেগুলোর দায়িত্ব ছিল মুকেশের ওপর।

 

রাজস্থান থেকে উঠে আসা মুকেশ ২০১৭ সাল থেকে অসওয়াল পরিবারের সঙ্গে কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দিয়েছিল।

 

মুকেশ নিখোঁজ হওয়ার পরেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে বসুন্ধরার দিকে। অভিযোগ, মুকেশকে নাকি প্রথমে অপহরণ এবং পরে খুন করানো হয়েছে। যদিও অসওয়াল পরিবারের দাবি, মুকেশ জীবিত রয়েছেন এবং বর্তমানে তানজানিয়ায় রয়েছেন।

বসুন্ধরার জন্ম ১৯৯৯ সালে। সুইজারল্যান্ডের বিত্তশালী ব্যবসায়ী পঙ্কজ এবং রাধিকা অসওয়ালের কন্যা বসুন্ধরা ‘অসওয়াল গ্রুপ গ্লোবাল’ গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

 

বসুন্ধরা সুইজারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ফিন্যান্স’ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। অ্যাক্সিস মিনারেলসের নির্বাহী পরিচালক বসুন্ধরা নিজেদের গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত, আর্থিক তদারকি এবং সরকারি পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার দায়িত্বও সামলান।

 

বসুন্ধরা একটি কার্বন ডাই-অক্সাইড ক্যাপচারিং প্ল্যান্ট তৈরি করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থায় পুনর্ব্যবহত পানি সরবরাহের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন।

 

বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অসওয়াল পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় দুই লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিখ্যাত এস্টেট ‘ভিলা হারি’ প্রায় ১,৬৪৯ কোটি টাকায় কিনেছেন তারা।

 

সেই ধনকুবের পরিবারের কন্যাই বন্দি পূর্ব আফ্রিকার দেশের জেলে। গত তিন বছর ধরে উগান্ডায় তার পরিবারের কারখানার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বসুন্ধরা। গত ১ অক্টোবর তাদেরই পরিবারের একটি মদের কারখানা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

 

অসওয়াল পরিবারের অভিযোগ, বসুন্ধরাকে আটক করতে এসেছিলেন ‘অস্ত্রধারী ২০ জন লোক’। ওই সশস্ত্র ব্যক্তিরা নিজেদের উগান্ডার পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে আটক করেন তাকে।

 

উগান্ডার পুলিশ বসুন্ধরাকে ফৌজদারি এবং বাণিজ্যিক অপরাধসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে আটক করেছে। বসুন্ধরার পরিবারের অভিযোগ, ‘অবৈধ ভাবে’ আটক করা হয়েছে তাকে। তার আটককে ‘কর্পোরেট এবং রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলেও দাবি করেছে অসওয়াল পরিবার।

 

অসওয়াল পরিবার আরও দাবি করেছেন, বসুন্ধরার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে সে সব ‘মিথ্যা’। তাদের ব্যবসায়িক প্রতিযোগিরা উগান্ডা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়েই নাকি এমনটা করেছেন।

 

অসওয়ালদের আরও দাবি, যে মুকেশকে খুনের দায়ে বসুন্ধরাকে আটক করা হয়েছে তিনি জীবিত রয়েছেন এবং বর্তমানে তানজানিয়ায় বসবাস করছেন। তা সত্ত্বেও উগান্ডা কর্তৃপক্ষ বসুন্ধরাকে মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছে।

 

উগান্ডা কর্তৃপক্ষের দাবি, বসুন্ধরাকে একজন নিখোঁজ ব্যক্তির মামলায় আটক করা হয়েছে। তারপর থেকে তিন সপ্তাহেরও বেশি জেলবন্দি তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘ছাত্রশিবির বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী’

» দুর্নীতির মামলায় সম্রাটের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

» শেখা হাসিনাকে ‘ডেভিল রানী’ আখ্যা দিয়ে সোহেল তাজের ফেসবুক পোষ্ট

» আমরা মারা গেলে কেউ না কেউ আবার উঠে আসবে: হাসনাত

» ‘বাবারা, রাজনীতির ময়দানে আরও অভিজ্ঞতা সঞ্চার করার নসিহত করছি’: সালাহউদ্দিন

» সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে এনসিপির পথসভা

» সবার আগে এক দফা ঘোষণা দেন তারেক রহমান: ইশরাক

» গোপালগঞ্জকে আওয়ামী লীগ মুক্ত করা হবে: নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী

» কিছু ঘটলে সরকারকে না বলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিছিল হচ্ছে কেন : প্রশ্ন রিজভীর

» সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করলে গোপালগঞ্জে লং মার্চ : নাহিদ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ভারতীয় ধনকুবেরের কন্যা উগান্ডায় বন্দি!

ছবি সংগৃহীত

 

উগান্ডার পুলিশ বসুন্ধরা অসওয়াল নামে ভারতীয় এক ধনকুবেরের কন্যাকে আটক করেছে। অসওয়াল পরিবারের কর্মচারী মুকেশ মেনারিয়াকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় বসুন্ধরাকে আটক করে।

 

ব্যক্তিগত বিমানসহ সারা বিশ্বে অসওয়াল পরিবারের যত বাড়ি রয়েছে, সেগুলো দায়িত্ব ছিল মুকেশের ওপর। খবর আনন্তবাজার পত্রিকার।

তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় বন্দি সুইজারল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনকুবের পঙ্কজ অসওয়ালের কন্যা বসুন্ধরা অসওয়াল।

 

অসওয়াল পরিবারের কর্মচারী মুকেশ মেনারিয়াকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় তাকে আটক করে উগান্ডার পুলিশ। ব্যক্তিগত বিমানসহ সারা বিশ্বে অসওয়াল পরিবারের যত বাড়ি রয়েছে, সেগুলোর দায়িত্ব ছিল মুকেশের ওপর।

 

রাজস্থান থেকে উঠে আসা মুকেশ ২০১৭ সাল থেকে অসওয়াল পরিবারের সঙ্গে কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দিয়েছিল।

 

মুকেশ নিখোঁজ হওয়ার পরেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে বসুন্ধরার দিকে। অভিযোগ, মুকেশকে নাকি প্রথমে অপহরণ এবং পরে খুন করানো হয়েছে। যদিও অসওয়াল পরিবারের দাবি, মুকেশ জীবিত রয়েছেন এবং বর্তমানে তানজানিয়ায় রয়েছেন।

বসুন্ধরার জন্ম ১৯৯৯ সালে। সুইজারল্যান্ডের বিত্তশালী ব্যবসায়ী পঙ্কজ এবং রাধিকা অসওয়ালের কন্যা বসুন্ধরা ‘অসওয়াল গ্রুপ গ্লোবাল’ গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

 

বসুন্ধরা সুইজারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ফিন্যান্স’ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। অ্যাক্সিস মিনারেলসের নির্বাহী পরিচালক বসুন্ধরা নিজেদের গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত, আর্থিক তদারকি এবং সরকারি পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার দায়িত্বও সামলান।

 

বসুন্ধরা একটি কার্বন ডাই-অক্সাইড ক্যাপচারিং প্ল্যান্ট তৈরি করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থায় পুনর্ব্যবহত পানি সরবরাহের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন।

 

বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অসওয়াল পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় দুই লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিখ্যাত এস্টেট ‘ভিলা হারি’ প্রায় ১,৬৪৯ কোটি টাকায় কিনেছেন তারা।

 

সেই ধনকুবের পরিবারের কন্যাই বন্দি পূর্ব আফ্রিকার দেশের জেলে। গত তিন বছর ধরে উগান্ডায় তার পরিবারের কারখানার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বসুন্ধরা। গত ১ অক্টোবর তাদেরই পরিবারের একটি মদের কারখানা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

 

অসওয়াল পরিবারের অভিযোগ, বসুন্ধরাকে আটক করতে এসেছিলেন ‘অস্ত্রধারী ২০ জন লোক’। ওই সশস্ত্র ব্যক্তিরা নিজেদের উগান্ডার পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে আটক করেন তাকে।

 

উগান্ডার পুলিশ বসুন্ধরাকে ফৌজদারি এবং বাণিজ্যিক অপরাধসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে আটক করেছে। বসুন্ধরার পরিবারের অভিযোগ, ‘অবৈধ ভাবে’ আটক করা হয়েছে তাকে। তার আটককে ‘কর্পোরেট এবং রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলেও দাবি করেছে অসওয়াল পরিবার।

 

অসওয়াল পরিবার আরও দাবি করেছেন, বসুন্ধরার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে সে সব ‘মিথ্যা’। তাদের ব্যবসায়িক প্রতিযোগিরা উগান্ডা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়েই নাকি এমনটা করেছেন।

 

অসওয়ালদের আরও দাবি, যে মুকেশকে খুনের দায়ে বসুন্ধরাকে আটক করা হয়েছে তিনি জীবিত রয়েছেন এবং বর্তমানে তানজানিয়ায় বসবাস করছেন। তা সত্ত্বেও উগান্ডা কর্তৃপক্ষ বসুন্ধরাকে মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছে।

 

উগান্ডা কর্তৃপক্ষের দাবি, বসুন্ধরাকে একজন নিখোঁজ ব্যক্তির মামলায় আটক করা হয়েছে। তারপর থেকে তিন সপ্তাহেরও বেশি জেলবন্দি তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com